মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ’বানৌজা সমুদ্র অভিযান’

চট্টগ্রাম, ৮ এপ্রিল ২০২৫ (মঙ্গলবার): সম্প্রতি ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’।
আজ সকালে ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় ১২০ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রীসহ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করে। যাত্রার আগে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ত্রাণ পাঠানোর কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং অংশগ্রহণকারী নৌসদস্যদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
ত্রাণ বহনকারী জাহাজটি আগামী ১১ এপ্রিল ইয়াঙ্গুন বন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধিদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সহায়তা তুলে দেবে বাংলাদেশ।
মিয়ানমারের মানুষের জন্য পাঠানো এই সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে। এতে অংশ নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সেনা কল্যাণ সংস্থা, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট ও সশস্ত্র বাহিনী।
১২০ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৭৭ মেট্রিক টন শুকনা খাবার, ৯ টনের বেশি তাবু ও পোশাক, ২৯ মেট্রিক টন বিশুদ্ধ পানি, ৪ মেট্রিক টন হাইজিন কিট ও প্রায় ১ মেট্রিক টন ওষুধ।
এই জরুরি সহায়তা মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং তাঁদের দুর্ভোগ লাঘব করবে।
উল্লেখযোগ্য যে, ২৮ মার্চ ২০২৫ তারিখে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ সরকার প্রথম দুই ধাপে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর মাধ্যমে ৩১.৫ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রীসহ উদ্ধারকারী ও চিকিৎসক দল পাঠিয়েছিল।
বাংলাদেশের এই মানবিক সহায়তা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস ও বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে। এর আগেও ২০২৩ সালে ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্ক ও ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’-তে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা প্রেরণ করেছিল বাংলাদেশ। ভবিষ্যতেও যেকোনো দুর্যোগে সরকার ঘোষিত নীতির আলোকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী মানবিক সহায়তায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।