শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যাকাণ্ড: ছুরিকাঘাত করে বহিরাগত নাসিম

রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আট আসামির একজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তারা হলন– প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী মেহেরাজ, পিয়াস ও মাহাথির এবং তাদের বহিরাগত সহযোগী সোবহান নিয়াজ তুষার, হৃদয় মিয়াজী, রিফাত, আলী ও ফাহিম।

বনানী থানার ওসি রাসেল সরোয়ার জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

এদিকে, পারভেজ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি মেহেরাজ, পিয়াস ও মাহাথিরকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও তদন্তসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দোকানে শিঙাড়া খাচ্ছিলেন দুই তরুণী। তাদের একজন প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পিয়াসের বান্ধবী। পারভেজ সেখানে ছিলেন, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাসছিলেন। তিনি কেন হাসলেন– এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পিয়াসের বান্ধবী। এ সময় পিয়াস, মেহেরাজ ও মাহাথিরের সঙ্গে পারভেজ ও তার বন্ধুদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নজরে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আব্দুস সালাম মণ্ডলসহ কয়েকজন শিক্ষক উভয়পক্ষকে ডেকে মীমাংসা করে দেন।

প্রক্টর আব্দুস সালাম নিউজমেটকে বলেন, ‘মীমাংসার পর ভেবেছিলাম, আর কোনো ঝামেলা হবে না। কিন্তু তারা বের হয়ে যাওয়ার পর ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে বহিরাগতরা এসে পারভেজের বুকে ছুরি মারে।’

ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, হাফপ্যান্ট পরা এক যুবক পারভেজের বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করছে। পুলিশ বলছে, ওই যুবক বহিরাগত। প্রাইম এশিয়ার শিক্ষার্থীদের দাবি, নাসিম নামের ওই যুবক কড়াইলের টিঅ্যান্ডটি ইউনিট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। বন্ধু পিয়াসের নির্দেশে পারভেজকে ছুরিকাঘাত করে এই নাসিম। 

পারভেজ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে রোববার দিবাগত গভীর রাতে মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন– আল কামাল শেখ, আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল আমিন সানি। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্তের পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গতকাল সোমবার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ড শুনানিতে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্যাহ বলেন, ‘হিরোইজম দেখিয়েছে, জিরো হয়েছে। ওদের (আসামিদের) তো কোনো ক্ষতি নেই; ক্ষতি ওদের বাবা-মায়ের।’ পরে আদালত তিনজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই তিনজন কড়াইলের টিঅ্যান্ডটি ইউনিট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমের সহযোগী বলে জানিয়েছে পুলিশ।