অস্ট্রেলিয়ায় দ্রুত বাড়ছে মাঙ্কিপক্স
অস্ট্রেলিয়ায় দ্রুত গতিতে বাড়ছে প্রাণঘাতী ছোঁয়াচে রোগ এমপক্স (মাঙ্কিপক্সে) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে গত তিন মাসে দেশটিতে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন শত শত রোগী।
অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ম্যাথিউ শিল্ডস মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসিকে এ সম্পর্কে বলেন, চলতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩৭ জন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই রোগটির সংস্পর্শে এসেছেন গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সে বছর মোট ১৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন এই রোগে। পরের বছর ২০২৩ সালে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ২৬ জন। সেই হিসেবে চলতি বছর আক্রান্তদের সংখ্যায় রীতিমতো উল্লম্ফণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
ম্যাথিউ শিল্ড বলেন, শহর এলাকার তুলনায় এর আশপাশ বা বাইরের এলাকাগুলোর বাসিন্দারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা ইতোমধ্যে দেশজুড়ে এমপক্সের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করেছি, তবে মফস্বল এবং গ্রামীণ এলাকাগুলোতে এই কর্মসূচি কিছুটা দুর্বলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এমপক্স বা মাঙ্কিপক্স একটি বিরল ও স্বল্প পরিচিত রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার উষ্ণ ও আদ্র বনাঞ্চলের বানররা ছিল এ রোগের প্রথম শিকার। পরে একসময় মানবদেহেও সংক্রমিত হওয়া শুরু করে রোগটি।
স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণীর একটি ভাইরাস এ রোগের জন্য দায়ী। ভাইরাসটির দু’টি রূপান্তরিত ধরন রয়েছে— ক্ল্যাড – ১ (মধ্য আফ্রিকান) এবং ক্ল্যাড- ২ (পশ্চিম আফ্রিকান)। এই রোগে প্রতি ১০০ আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় ৪ জনের।
রোগটির বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। প্রথম পর্যায়ে রোগীর জ্বর আসে, পাশাপশি শরীরে দেখা দেয় ফোস্কা ও অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। পরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে; বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলা।
মাঙ্কিপক্স রোগের জন্য এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, স্মলপক্স বা জলবসন্তের জন্য ব্যবহৃত টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর।