সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ১০০ দিন পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টায় তার এই ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
৮ অগাস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করেন। সেদিনেই জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস।
তিনি সেদিন বলেন, ‘অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট তার সরকার, দেশের সবার সরকার। এখানে সবার আকাঙ্ক্ষা পূরণের অধিকার থাকবে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে দুরে থাকি, সবার জন্য মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি আমাদের বিজয় অবশ্যই হবে।’
দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই সপ্তাহ না যেতেই দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যার ধাক্কা সামলাতে হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। তার মধ্যেই ২৫ অগাস্ট দ্বিতীয় দফা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেদিন তিনি দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের ‘গণতন্ত্রহীনতায়’ দেশের যে পরিস্থিতি হয়েছিল, তা থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে তার সরকার প্রস্তুত। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফল ধরে রাখতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
ইউনূস সেদিন বলেছিলেন, রাতারাতি এ অবস্থা থেকে উত্তরণ কঠিন। এ অবস্থায় সরকারকে ‘জিম্মি করে’ দাবি আদায়ের চেষ্টা না করারও অনুরোধও জানিয়েছিলেন।
সেই ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অগ্রাধিকার ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইউনূস সেদিন বলেন, ‘কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন।’
দায়িত্ব নেওয়ার এক মাসের মাথায় ১১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দফা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। সরকারের পট পরিবর্তনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সেদিন তিনি ছয়টি কমিশন গঠন করার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবছি।’