বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় ভারত: হাইকমিশনার
ভারত পারস্পারিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে এবং শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি তলব করা হয়। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিকেল ৪টার কিছু আগে প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছান। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর দপ্তরে তাকে তলব করা হয়। বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে আধা ঘণ্টা প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেন রিয়াজ হামিদুল্লাহ।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রণয় ভার্মা বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বহুমুখী। একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক আটকে থাকবে না। আমরা দুই দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে আগ্রহী।
এবার নাটকে ডা. সাবরিনা, সঙ্গে ফজলুর রহমান বাবুএবার নাটকে ডা. সাবরিনা, সঙ্গে ফজলুর রহমান বাবু
এর আগে, সোমবার (২ ডিসেম্বর) ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা চালায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা। তারা হামলা, ভাঙচুরের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। এছাড়া মিশনের কর্মকর্তাদেরও তারা মারধর করে।
এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত, ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ করা এবং কূটনীতিক ও অ-কূটনৈতিক সদস্যদের নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশের বার্তায় আরও বলা হয়, ‘প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে বিক্ষোভকারীদের সেখানে ঢুকতে দেয়া হয়।’
‘এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরিতাপের বিষয়, প্রাঙ্গণ (হাইকমিশনের) রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ছিল না’, উল্লেখ করা হয় বার্তায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সরকার আরও উল্লেখ করতে চায়, বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই জঘণ্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায় সহিংস বিক্ষোভেরই অনুরূপ।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগরতলার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে, কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। এ ঘটনায় ত্রিপুরায় মঙ্গলবার ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।