সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ || ৮ পৌষ ১৪৩১

Advertisement

মাছুম বিল্লাহ

প্রকাশিত: ১৩:২০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৩:২০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শ্রীলঙ্কার শিক্ষা ও শিক্ষকদের নিয়ে কিছু কথা

শ্রীলঙ্কার শিক্ষা ও শিক্ষকদের নিয়ে কিছু কথা

ব্রিটিশ কাউন্সিল শ্রীলঙ্কা এবং শ্রীলঙ্কান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হলো শিক্ষা ও ইংরেজি ভাষা উন্নয়নবিষয়ক সেমিনার। তাদের আমন্ত্রণে সেই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছি। এ নিয়ে শ্রীলঙ্কায় আমার দ্বিতীয় ভ্রমণ, দুবারের উদ্দেশ্য প্রায় একই। শ্রীলঙ্কা শিক্ষা-দীক্ষায় যেহেতু আমাদের চেয়ে এগিয়ে তাই সেখানকার শিক্ষা নিয়ে কিছু কথা এখানে তুলে ধরছি।

শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যার বয়স্ক সাক্ষরতার হার ২০২১ সালে ছিল ১০০%। বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা দেশের কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক পরিষদ উভয়েরই নিয়ন্ত্রণাধীন। কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ কিছু দায়িত্ব বহন করে এবং প্রাদেশিক পরিষদ অন্যগুলোর জন্য স্বায়ত্তশাসনের অধীনে দায়িত্বপ্রাপ্ত। শ্রীলঙ্কায় প্রথম শ্রেণি থেকে একদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক। তবে, প্রাক-প্রাথমিকে যাওয়া বাধ্যতামূলক নয় এবং প্রাক-প্রাথমিকের ৮০ শতাংশ বিদ্যালয় রাষ্ট্র পরিচালিত নয়। এগুলোর ৭১ শতাংশ ব্যক্তি পর্যায়ে বা সংস্থা পরিচালিত, ৭ শতাংশ ধর্মীয় সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকে আর ৩ শতাংশ এনজিও (বেসরকারি সংস্থা) পরিচালিত। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক অর্থাৎ একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ৯০ শতাংশ বিদ্যালয়ই রাষ্ট্র পরিচালিত।

১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে দেশের সব বিদ্যালয় রাষ্ট্রায়ত্ত করা হয়, সামান্য কিছু প্রতিষ্ঠান যারা নিজেরাই বেসরকারি থেকে যায়। যারা প্রাইভেট বিদ্যালয় নামে পরিচিত। আশির দশকের প্রথমদিকে আন্তর্জাতিক স্কুল নামে আর এক ধরনের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিকমানের পরীক্ষা পরিচালনা করে থাকে। এগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত নয়। শ্রীলঙ্কার প্রাইভেট স্কুল হচ্ছে তিন ধরনের। সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত প্রাইভেট স্কুল, সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত নয় এবং আন্তর্জাতিক স্কুল।সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত স্কুলগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন। এসব স্কুলে শিক্ষকদের বেতন রাষ্ট্র প্রদান করে থাকে। স্কুলে শিক্ষার্থীদের নামমাত্র একটা ফি প্রদান করতে হয়। এজাতীয় অধিকাংশ স্কুলই বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট দ্বারা পরিচালিত। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পুরোপুরি সুপারভিশন করে থাকে বিধায় প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন খুবই কম। প্রাইভেট বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় ক্যাটগরির হচ্ছে যেসব স্কুল সরকার থেকে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা নেয় না। তারা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ে চলে। তারা ভর্তি ফি এবং টিউশন ফি দুটোই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে। এসব বিদ্যালয়ও একটি বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট দ্বারা পরিচালিত। স্কুলগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনকৃত আর তাই সরকারি সুপারভিশন তাদের মানতে হয়। তবে এসব বিদ্যালয়ের ম্যানজেমেন্ট কমিটি প্রচুর স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে।

১৯৭৭ সালে শ্রীলঙ্কায় উদার অর্থনৈতিক পলিসির গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্কুলের ধারণাটি চলে আসে এবং ১৯৭৮ সালে বিদেশি বিজনেসের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক বিদ্যালয় খোলার জন্য নিবন্ধন করার অনুমতি প্রদান করা হয়।

২০০৭ সাল থেকে দেশীয় কোম্পানিগুলোকেও আন্তর্জাতিক বিদ্যালয় খোলার অনুমতি প্রদান করা হয়। আন্তর্জাতিক স্কুলগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনকৃত নয় আর তাই সরকারি সুপারভিশনও এখানে নেই। এই স্কুলগুলোর ম্যানেজমেন্ট কমিটিগুলো সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত, সহায়তাপ্রাপ্ত নয় এমন সব স্কুলের কমিটির চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে।

শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরাসরি ‘জাতীয় বিদ্যালয়গুলো অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারি বিদ্যালয়গুলো যার সংখ্যা মোট বিদ্যালয় তিন শতাংশ, এগুলো অত্যন্ত রিসোর্সফুল। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এগুলোতে রয়েছে। এর কিছুটা তুলনা চলে আমাদের সরকারি বিদ্যালয়ের সঙ্গে। আমাদের সরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যাও কিন্তু ৩%। রাষ্ট্র পরিচালিত বিদ্যালয়ের বিশাল অংশই নিয়ন্ত্রণ করে প্রাদেশিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখানে নয়টি প্রাদেশিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় রয়েছে। এগুলোর শিক্ষকরা যদিও প্রাদেশিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বেতন পান কিন্তু বিদ্যালয়গুলো জাতীয় বিদ্যালয়গুলোর চেয়ে কম রিসোর্সফুল, কম সুবিধাপ্রাপ্ত।

প্রাইভেট বিদ্যালয়গুলোতে স্থানীয় কারিকুলাম সিংহলী কিংবা তামিল অনুসরণ করা হয়। অথবা ইংরেজি কারিকুলাম অনুসরণ করা হয়। বর্তমানে ইংরেজি কারিকুলামের দিকেই বেশি অভিভাবক ও শিক্ষার্থী ঝুঁকছে এবং সরকারও ইংরেজি কারিকুলামের বিদ্যালয় সম্প্রসারণের কাজ ত্বরান্বিত করছে। অটোনোমাস স্কুল, সরকারি স্কুল, বেসরকারি স্কুল সব বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূলে বই, পোশাকসহ আরও কিছু সুবিধা রাষ্ট্র থেকে সরবরাহ করা হয়। 
ইন্টরন্যাশনাল স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েই চলছে তার কারণ হচ্ছে এখানকার কারিকুলাম আন্তর্জাতিক এবং শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি। এখানকার শিক্ষার্থীরা দেশে কিংবা বিদেশে উচ্চ শিক্ষা ও চাকরির জন্য বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে। তাই এলিট অভিভাবক, ধনী অভিভাবক ছাড়াও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া কিন্তু সচেতন অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের আশায় ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পাঠিয়ে থাকেন যদিও এখানকার পড়াশোনার খরচ অনেক বেশি। বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় মোট শিক্ষার্থীরা ৩২ শতাংশই ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়াশোনা করছে।

শ্রীলঙ্কায় সরকারি স্কুলের শিক্ষক হতে হলে ন্যাশনাল কলেজ অব এডুকেশন (বিদ্যাপীঠ) থেকে তিন বছরের প্রি-সার্ভিস টিচার এডুকেশন-এর প্রি-সার্ভিস কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। আর সেখানে ভর্তি হতে জিসিই ( অ্যাডভান্সড লেভেল) পরীক্ষা এবং জিসিই অর্ডিনারি লেভেলের বিষয়গুলোতে পাস করে ন্যাশনাল কলেজেস অব এডুকেশনে ভর্তি হতে হয়। গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাদেশিক কাউন্সিল তাদের জন্য শিক্ষকতা পেশা অফার করে থাকে। আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়গুলোও শিক্ষকতা করা যায় গ্র্যাজুয়েশনের পর। প্রাইভেট বিদ্যালয়েও শিক্ষকতা পেশা শুরু করা যায়। সেখানে গ্রেড-৫ শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষার ক্লাস, ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেলের ক্লাস পরিচালনা করতে হয়। তবে পড়ানোর বিষয়সমূহ, প্রশ্নপত্রের ধরন এবং পেশাগতভাবে শিক্ষাদান করার সঙ্গে ভালো পরিচিতি প্রয়োজন হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা পাস করেন শিক্ষক হওয়ার জন্য তাদের শিক্ষায় ডিপ্লোমা কোর্স অবশ্যই সম্পন্ন করতে হয়। আর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে শিক্ষায় ডিপ্লোমা নিয়ে যারা পাস করেন তারা সরাসরি টিচিং-এ ঢুকতে পারেন। তবে ওইসব শিক্ষকরা শুধু গ্রেড ওয়ান থেকে অর্ডিনারি লেভেল পর্যন্ত পড়াতে পারেন, তার ওপরে তাদের ক্লাস দেওয়া হয় না। অর্থাৎ অ্যাডভান্সড লেভেলে পড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করতে হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায় শিক্ষক হতে হলে টিচার্স এডুকেশন প্রোগ্রাম সম্পন্ন করতে হয় একটি স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে। সেটি হতে পারে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে শিক্ষায় ডিগ্রি নেওয়া কিংবা টিচার ট্রেইনিং সম্পন্ন করা। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক কিছু শর্তাবলিও পূরণ করতে হয়। যেমন নির্দিষ্ট কয়েকটি পরীক্ষায় পাস করা, টিচিং সার্টিফিকেট অর্জন করা, নির্দিষ্ট বয়স থাকা ইত্যাদি। আমাদের দেশে এনটিআরসিএ- কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগের পূর্বে যেভাবে শিক্ষক নিয়োগ হতো তাতে যে কেউ শিক্ষক হতে পারতেন সেই বিষয়টি শ্রীলঙ্কায় নেই এবং ছিল না।

শ্রীলঙ্কায় শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ বছর, তবে ইচ্ছে করলে ৫৫ থেকে ৬০ এর মধ্যেও তারা অবসরে যেতে পারেন। অবসরে যাওয়ার পর প্রাইভেট স্কুলে তারা আবার শিক্ষকতা শুরু করতে পারেন। মানসম্পন্ন শিক্ষক ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের চাহিদা শ্রীলঙ্কা প্রচুর। আর তাই এটি স্বীকৃত, অবসরের পর তারা পুনরায় যেকোনো বেসরাকরি বিদ্যালয়ে চাকরি করতে পারেন। ইংরেজি শিক্ষক, বিজ্ঞান শিক্ষক, গণিত শিক্ষক ও আইসিটি শিক্ষকদের প্রচুর চাহিদা ও মূল্য রয়েছে শ্রীলঙ্কায় যেমনটি আমাদের দেশেও দেখা যায়। একজন বিশেষজ্ঞ শিক্ষককে একাধিক স্কুলে কাজ করতে হয় কারণ বিষয় বিশেষজ্ঞ শিক্ষক সব স্কুলে থাকে না। এটি একটি চমৎকার সিস্টেম। একজন বিষয় বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের সার্ভিস বহু শিক্ষার্থী পেয়ে থাকেন, ওই শিক্ষকেরও ভালো লাগে কারণ হচ্ছে তার কাজের, পরিচিতির পরিধি হয় তখন বৃহত্তর। রাষ্ট্রীয় রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অনুযায়ী খরচ কম হয়।

কোন দেশের শিক্ষকরাই গ্রাম ও পিছিয়ে পড়া এলাকায় যেতে চান না। শ্রীলঙ্কায়ও একই অবস্থা। গ্রামীণ এলাকায়, অনুন্নত এলাকায় শিক্ষকদের পোস্টিং দিলে তারা যাতে সেখানে যান এবং চাকরি ছেড়ে না দিয়ে শিক্ষকতায় থাকেন তাই শ্রীলঙ্কান সরকার ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে আসছে। পিছিয়ে পড়া ও অনুন্নত এলাকার বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট এমনিতেই লেগে থাকে। তাই যেসব শিক্ষকদের ওইসব এলাকায় পোস্টিং দেওয়া হয় তাদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা সহজে লোন দেওয়া ও বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি শিক্ষকদের বাসস্থানের ব্যবস্থাও করা হয়, পদোন্নতির ক্ষেত্রেও বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। যেমন- তাইওয়ানের ডাক্তার যারা গ্রামে চাকরি করেন তাদের বেতন দ্বিগুণ। এটি একটি চমৎকার পদ্ধতি।

অনেকের প্রশ্ন যে, শ্রীলঙ্কায় আমাদের দেশের মতো প্রাইভেট টিউশন আছে কি না। প্রচুর আছে। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, ১৯৪৩ সাল থেকেই সেখানে প্রাইভেট টিউশনি চলে এসেছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই টিউশনির হার শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় বেশি। তার একটি কারণ হচ্ছে গ্রামীণ এলাকায় মানসম্মত শিক্ষক পাওয়া যায় কম। তাই শিক্ষার্থীদের ঘাটতি মেটানোর জন্য তাদের প্রাইভেট পড়তে হয়। আমি দেখেছি গ্রামে সন্ধ্যার পরও শিক্ষার্থীরা নিজেরা কিংবা বাবা-মার সঙ্গে প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়ে বাসায় ফিরছে। প্রাইভেটের আর একটি কারণ হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রচুর পড়তে হয়। আর আমাদের এসএসসি ও এইচএসসির মতো তাদের ‘ও’ লেভেল ও ‘এ’ লেভেল নামক পাবলিক পরীক্ষায় ভালো করার জন্যও প্রচুর প্রাইভেট পড়তে হয়। সবশেষ কারণটি হচ্ছে শিক্ষকরা বাড়তি ইনকামের জন্য প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন এবং এটি একটি ট্রাডিশনে পরিণত হয়েছে। এটি স্বীকৃত। রাষ্ট্র পরিচালিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তারা তাদের বেতনভাতা নিয়ে খুশি। তাদের অনেক বেশি (দ্বিগুণ এমনকি তিনগুণ বেতনে) বেসরকারি বিদ্যালযে নিতে চায় কিন্তু তারা সেখানে অনেকে যান না তার একটি কারণ হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালিত বিদ্যালয়ের পেনশন সুবিধা। আমাদের দেশের মতো এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) সিস্টেম সেখানে নেই। এটি আমাদের দেশের বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য একটি অস্থায়ী পদ্ধতি যেটি সামরিক শাসকরা করে গিয়েছিলেন কুইক সমাধানের জন্য। এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয় অথচ এটিকেই আমরা স্থায়ী ব্যবস্থা ধরে নিয়েছি। কোনো শিক্ষক সংগঠন কিংবা আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এই অস্থায়ী পদ্ধতিটি নিয়ে তেমন কিছু বলছে না যা রহস্যজনক মনে হয়। বিএনপি আমলে একজন শিক্ষামন্ত্রী গর্ব করে বলেছিলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য যে চমৎকার পদ্ধতি আমাদের দেশে বিদ্যমান পৃথিবীর কোনো দেশে তা নেই। অস্থায়ী পদ্ধতি অন্য দেশে থাকবে কেন?

লেখক: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

সূত্র: দৈনিক বাংলা