বুধবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৫ || ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ২২:১০, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে: মির্জা আব্বাস

নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে: মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ফাইল ছবি

নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। 

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র, সংস্কার ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ ও গণতন্ত্র ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান টিপু।

তিনি বলেন, ‘আমি একটা কথা বলি, যেটা আমার নিজের কথা…এটা কিন্তু আমার দলের কথা না। ইংরেজিতে একটা কথা আছে, যার অর্থ দাঁড়ায় ‘ভালো কিছু আশা করো, খারাপ কিছু চিন্তা করো। আমি ভালো কিছু আশা করি। খারাপটা ভাবি এভাবে- সম্ভবত নির্বাচন খুব তাড়াতাড়ি উনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) করবেন না। আমি তার কোনো লক্ষণ আমি দেখি না।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ড. ইউনুস সাহেব বলেছেন, ডিসেম্বরে না হোক জুনে হবে। এই কথাটাই আপনাকে একটা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। একবার বললেন ডিসেম্বর, আবার বললেন জুন। বিব্রতকর অবস্থার জন্য আপনি নন, এটার জন্য আপনি দায়-দায়িত্ব বহন করেন না। আপনি ভোট ডিসেম্বরে বলার পরপরই অন্য একজন বলে দিলেন জুনে। পরে এটা আপনিও বলেছেন।’

‘নির্বাচন খুব তাড়াতাড়ি হবে কিনা’ তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘কয়েকটা দল যা শুরু করছে- এইটা না হলে নির্বাচন হবে না, ওইটা না হলে নির্বাচন হবে না, যদি এগুলো হতে থাকে তাহলে নির্বাচনটা কেমনে হবে ভাই।”

তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেই ফেলেছেন যে, আমরা নির্বাচনে যাবো না। আরে ভাই, কয়েকদিন আগে হলে আপনারা নির্বাচনে গেলেই কি না গেলেই কি? আপনাদের চিনতো ক্যাডা বাংলাদেশে? এখন আপনারা নির্বাচনে যাবেন না, ধমক দেন। কোনো লাভ নেই।’

‘জনগণকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে’ বলে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের দেশটা খুব খারাপ অবস্থায় আছে। আমাদের দেশের জাতির, জনগণের, দলের প্রত্যেকের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যদি বাংলাদেশের জনগণকে বিভক্ত করার যায় তাহলে এদেশে আবারও ভারতীয় আধিপত্যবাদের হাতে চলে যাবে। সুতরাং যে দলই হোক বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ যত দল আছে...মতবিরোধ থাকতেই পারে আমাদের। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে আমাদেরকে একটা কথা মনে রাখতে হবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এখনো এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আমাদের বিপরীত শক্তি আমাদের দ্বিধা-বিভক্ত করার চেষ্টা করছে সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের ডানে-বায়ে আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট আছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘সুফিউর রহমান (প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়), এ তো আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট, আরও আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট আপনার ডানে-বায়ে আছে। আপনি (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস) দয়া করে এদের থেকে সাবধান থাইকেন। ওরা কিন্তু আপনাকে বিপথে নিয়ে যাবে।’

সচিবালয়ে কয়েকজন সচিব, বাইরে একজন সাবেক সচিব এবং উপদেষ্টা পরিষদের কিছু লোক প্রধান উপদেষ্টাকে সঠিক রাস্তায় চলতে দেবে না বলে দাবি করেন তিনি। তবে মির্জা আব্বাস কারো নাম বলেননি।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনি নভেল লরিয়েট, সারা বিশ্বের মানুষ আপনাকে শ্রদ্ধা করে, আপনার সারা জীবনের অর্জন এরা শেষ করে দেবে।’

বিএনপি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার সফলতা চান বলে দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনার সফলতার ওপরে নির্ভর করছে আমার দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব।’

‘বিএনপির লোক প্রশাসনে বসে আছে’, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাচ্চাদের মত কথা বলতেছেন। বাচ্চাদের মত ওনারা বলছেন, আমি নির্বাচনে যাবো না। কেন যাবো না, প্রশাসনে বিএনপি বইসা রয়েছে। আরে ভাই, বিএনপি কোথাও নাই। এসব কথা বলবেন না। ১৬ বছর দেশের প্রশাসনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, সচিবালয়ের ভেতরে ফ্যাসিস্টদের দোসর, দেশের শত্রুগুলো বসে আছে, আওয়ামী লীগের দালালরা বসে আছে। তাদের কেন আপনারা বের করেন না? আমি যদি বলি তাদের কাছ থেকে আপনারা অবৈধ সুবিধা পাচ্ছেন?’

ঢাকা সিটি করপোরেশন এক করা প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি এক সময়ে অবিভক্ত ঢাকার মেয়র ছিলাম, এটা গর্বের বিষয়। আমার মনে হয়, আল্লাহর রহমতে খারাপ চালাইনি। এই ঢাকাকে দুই ভাগ করল আওয়ামী লীগ। কাজটা কিন্তু ভালো করে নাই। অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এখন যদি দুই ঢাকা যদি এক করে তাহলে প্রক্রিয়া আছে, শুধু এক করলে হবে না। এখন ঢাকা খুব বড় হয়েছে, এক করলেই হবে না। সুবিন্যস্ত একটা প্রশাসন তৈরি করতে হবে।’

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ